• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রংপুরে ঘাঘট নদীর কোল ঘেঁষে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী ইজতেমা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ নভেম্বর ২০১৯  

রংপুরের পায়রাবন্দে ঘাঘট নদীর কোল ঘেঁষে প্রায় দুই লাখ মুসল্লির সমাগমে শুরু হয়েছে মিনি ইজতেমা। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে তিন দিনের এ ইজতেমা শুরু হয়।

ফজরের নামাজের পর আম বয়ান শুরু করে তাবলীগ জামাতের আলেমগণ। আল্লাহ ও নবী-রাসুলের হুকুম আহকাম মেনে চলার মধ্যেই ইহকাল ও পরকালে সুখ শান্তি রয়েছে বলে উল্লেখ্য করেন তারা।

৪০ একর আয়তনের বিশাল এ মাঠে দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শামিয়ানার নিচে অবস্থান নেন। এখানে ১৫০টি কাতারের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি কাতারে দুই হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।

গত মঙ্গল ও বুধবারে রংপুর জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় দেড় লাখ মানুষ মাঠে সমবেত হয়েছেন। ইজতেমায় মুসল্লির সংখ্যা চার থেকে পাঁচ লাখে পৌঁছাতে পারে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।

এদিকে, রংপুর অঞ্চলের বৃহৎ এ ইজতেমাকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের এলাকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলেছেন। র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সহ পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরাও।

এছাড়াও ইজতেমা সফল করতে গঠিত ১২টি কমিটির প্রায় তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবী সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। আলাদাভাবে ১৫০ সদস্যের স্পেশাল স্বেচ্ছাসেবক দল রয়েছে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে। ইজতেমা মাঠে ইমামতি করবেন মাওলানা মোজাইদুল ইসলাম, মাওলানা ইউসুফ আলী ও মাওলানা আমিনুল ইসলাম। এবারও ইজতেমায় যৌতুকবিহীন ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক কয়েকজনের বিবাহ সম্পন্ন হবে।

এদিকে, যানবাহন রাখার ব্যবস্থা হিসেবে মাঠ সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গ্যারেজ তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। মুসল্লিদের পয়ঃনিষ্কাশনে ১৫০০ শৌচাগার, ৩০টি পাম্প ও ৩০টি ট্যাংকি স্থাপন করে অস্থায়ী গোসলখানা বানানো হয়েছে। এছাড়াও ইজতেমা মাঠের কোল ঘেঁষে থাকা ঘাঘট নদীর পাশাপাশি দুটি পুকুর প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঠে রাতে আলোর জন্য প্রায় এক হাজার বৈদ্যুতিক বাল্ব সরবরাহ করেছে সিটি করপোরেশন ও পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ।

ইজতেমা প্রস্তুতি কমিটির সদস্য হাফিজুল ইসলাম হাফিজ বলেন, 'ইজতেমাতে রংপুর মহানগরীসহ বিভাগের আট জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। মাঠে বাঁশের খুঁটিতে টাঙানো পুরো শামিয়ানাটি ওয়াটার প্রুফ। এর নিচে এক সঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। গতবার ইজতেমাতে তিন লাখ মুসল্লি সমবেত হয়েছেন। এবার তা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।'

এদিকে ইজতেমাকে ঘিরে মাঠের আশপাশ ও রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের দুইপাশে ব্যবসার পসরা সাজিয়েছে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। যেন তিন দিনের এ আয়োজনকে ঘিরে বদলে গেছে দমদমা ব্রিজ সংলগ্ন পায়রাবন্দের ইসলামপুর এলাকা। নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলে ট্রাফিক পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। আগামী শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ইজতেমার শেষ দিনে বিশেষ মোনাজাত শেষে মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার জন্য এখান থেকে কয়েক হাজার মুসল্লি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাবেন।