• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রোজায় সুস্থ থাকতে কী খাবেন, কী খাবেন না

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ৫ মে ২০১৯  

রমজান মাসে টানা ১৪-১৫ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয়। এ সময় দিনের বেলা আমাদের শরীর যকৃৎ ও পেশিতে জমানো শর্করা ও ফ্যাট থেকে শক্তি লাভ করে। শরীরে পানি জমা থাকে না। ঘাম ও প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়, পানিশূন্যতা হয় বলে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা দেখা দেয়। কাজে মনোযোগ দেওয়া যায় না। এ ছাড়া অ্যাসিডিটি, গ্লুকোজ কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয় রোজার মাসে।

ইফতারে আমরা অনেক বেশি খেয়ে ফেলি, ভাজা-পোড়া খাবারই বেশি থাকে। এ জন্য পেট ফাঁপা, বুক-গলা জ্বলা, বমি বমি ভাব হয়। পাকস্থলী ফাঁকা থাকার পর শুরুতেই অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার, তৈলাক্ত ও লবণাক্ত খাবার খেলে অ্যাসিডিটি তো বাড়বেই, সঙ্গে পানির তৃষ্ণা এবং খিদে বাড়িয়ে দেয়। ইফতারের পর থেকে সাহরি পর্যন্ত তাই উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, ফল, সবজি, বাদাম এবং পানিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

ইফতার
ইফতারে এমন খাবার রাখবেন, যাতে প্রাকৃতিক চিনির জোগান থাকে এবং যা দ্রুত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। 

পানীয়: পানি, ফলের শরবত, স্মুথি, দুধ-এগুলো পানীয়ের অন্তর্ভুক্ত। দুধ ও ফল দিয়ে বানানো ড্রিংকস যেমন ব্যানানা শেক, ম্যাঙ্গো শেক প্রাকৃতিকভাবে সুগার ও ক্যালরির ভালো উৎস। অতিরিক্ত চিনি দেওয়া শরবত বা কৃত্রিম ফলের জুস খাওয়া যাবে না। ঘরে তৈরি ফ্রেশ ফলের জুস নিন। 

খেজুর: খেজুর শর্করা ও খনিজ যেমন পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ এবং আঁশের অনেক ভালো উৎস। ইফতারে তাই দুটি করে খেজুর রাখুন। 

ফল: ইফতারে ফল ডিহাইড্রেশন দূর করে। বিশেষ করে পানিজাতীয় ফল যেমন তরমুজ, আনারস, বাঙ্গি, কমলা, মাল্টা, নাশপাতি খান। 

স্যুপ: সবজি ও চিকেন দিয়ে তৈরি স্যুপ রাখা ভালো। মাঝেমধ্যে ছোলা, পিঁয়াজু ও বেগুনির বদলে আমরা স্যুপ রাখতে পারি। 

দই: দইয়ে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন ও ভিটামিন ডি থাকে, সহজে খাবার হজম করে। ইফতারে তাই দই, চিড়া-মুড়ি মাখানো খেতে পারেন। সাহরিতে খাওয়ার পরও দই খেতে পারেন। 

কাঁচা ছোলা: রান্না ছোলার থেকে কাঁচা ছোলায় পুষ্টিগুণ বেশি। রান্না করলে যে তেল মসলা খাওয়া হতো, সেটা থেকেও বাঁচা যায়। ছোলায় ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও উচ্চ প্রোটিন রয়েছে। শরীরে শক্তির জোগান দিতে এর কোনো বিকল্প নেই।

রাতের খাবার 
ইফতারের পর রাতে হালকা খাবার খাওয়াই উত্তম। রাতে লাল আটার রুটি, পাস্তা, ভাত অল্প পরিমাণে খাবেন। প্রোটিনের উৎস হিসেবে বিনস, ডাল ও আঁশের চাহিদা পূরণের জন্য সালাদ থাকতে পারে।

সাহরি 
সাহরিতে শস্যযুক্ত খাবার রাখতে হবে। যেসব খাবার ধীরে ধীরে হজম হবে ও সারা দিন এনার্জি দেবে। যেমন: 
ওটস/কর্নফ্লেক্স: পানি, দুধ বা দই দিয়ে খাওয়া যায়, সঙ্গে ফল, বাদাম। 

সবজি ও সালাদ: সাহ্রিতে খাবারের সঙ্গে ভিটামিন, মিনারেলস ও পানীয়ের উৎস হিসেবে সালাদ ও সবজি থাকবে। 

মনে রাখবেন, সাহরি আজানের আধা ঘণ্টা আগে শেষ করবেন। সাহরি শেষে তাড়াহুড়া করে বেশি পানি পান করবেন না। ভাজা-পোড়া, তৈলাক্ত ও মিষ্টিজাতীয় খাবার বর্জন করুন। বিশেষ করে সাহরিতে মিষ্টি খাবেন না, এতে তৃপ্তি হরমোন লেপটিন কমে যায়, ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায়। চা, কফি পানিশূন্যতা বাড়ায়। খেজুর ও সাধারণ পানি দিয়ে রোজা ভাঙা উচিত।

পুষ্টি পরামর্শক, বিআইএইচএস হাসপাতাল, বাসাবো, ঢাকা