• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে কারণ ছাড়াই বিদ্যালয় স্থানান্তর করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২০  

সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই জোরপূর্বক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউপির তিস্তা চরের পশ্চিম হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, ১৯৪৬ সালে পশ্চিম হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। নদী ভাঙ্গনের কারণে এ পর্যন্ত প্রায় ছয় বার বিদ্যালয়টির অবকাঠামো স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিদ্যালয়টি পাটিকাপাড়া ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। আর তখন থেকে সেখানেই পাঠদান চলছে। 
এই পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখনো নতুন বই পায়নি। সরিয়ে নেয়া বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক না যাওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ। এতে করে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

এমন অবস্থায় ২০২০ সালের প্রথম দিনে সারা দেশের ন্যায় এ বিদ্যালয়েও নতুন বই বিতরণ করা হয়। কিন্তু ওই দিন শুধু চারজন শিক্ষার্থীকে নতুন বই দেয়া হয়। এরপর প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষকও আসে না, শিক্ষার্থীদের বইও দেয়া হয় না।

সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা আর ছুটাছুটি করে সময় পাড় করছেন। তবে এ সময় কোনো শিক্ষকের দেখা মেলেনি। শ্রেণিকক্ষে বই ছাড়াই বসে আছেন শিক্ষার্থীরা। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, ১ জানুয়ারি শুধু  চারজন শিক্ষার্থীকে নতুন বই দিয়ে চলে যান প্রধান শিক্ষক। এরপর আর তাদের দেখা মেলেনি। তাই প্রতিদিন নতুন বইয়ের আশায় বিদ্যালয় আসি আর দুপুরের পর বাড়ি চলে যাই।

এলাকাবাসী জানায়, পরিচালনা কমিটির সদস্যরা কোনো কারণ ছাড়াই বিদ্যালয়টি এখান থেকে অন্যত্র সরানোর পাঁয়তারা করেছে। তবে স্থানীয়দের বাধায় কিছু আসবাবপত্র ছাড়া আর কোন কিছু নিয়ে যেতে পারেনি। আর পরিচালনা কমিটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষকরাও বিদ্যালয়ে আসে না। তারা পরিচালনা কমিটির নির্ধারিত স্থানে টিনের চালায় তৈরি বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থী ছাড়াই বসে থেকে সময় পাড় করছেন।

এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি লালমনিরহাটে ডিসি, হাতীবান্ধার ইউএনও ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

এ বিষয়ে পশ্চিম হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন  জানান, বিদ্যালয়টি আমি স্থানান্তর করিনি। পাটিকাপাড়া ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্যালয়টি নির্মাণ করছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি। এখানে আমার কিছু করার নেই। কমিটির লোকজন যেখানে বিদ্যালয় নিয়ে যাবেন আমি সেখানেই যাবো।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আয়শা বেগম  বলেন, ওই এলাকায় তেমন কোনো শিক্ষার্থী নেই। এছাড়া এতো দূরে যেতে কষ্ট হয় শিক্ষকদের। তাই আমরা বিদ্যালয়টি সেখান থেকে এখানে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মিঠুন বর্মন  বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত আছি। সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বলেন, বিদ্যালয়টি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।