• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেই নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন বঙ্গমাতা’

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২০  

দেশের স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতা যেমন স্বপ্ন দেখতেন আমার মাও স্বাধীনতার সেই একই স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেই নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

শনিবার বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে স্মৃতিচারণা করে তাঁর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় গণভবন থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তন ও গোপালগঞ্জে যুক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ত্যাগ আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। সহধর্মিণী হিসেবেই শুধু নয়, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে সবসময়  প্রেরণা জুগিয়েছেন মা।

তিনি বলেন, ত্যাগের মধ্য দিয়ে একটা সংসারকে সুন্দর করা যায়, একটা প্রতিষ্ঠানকে সুন্দর করা যায়, একটা দেশকে সুন্দর করা যায়। চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার চেয়ে বড় আর কিছু হয় না। আমার মা ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেই দৃষ্টান্তই দেখিয়ে গেছেন। আমার মা প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী বলে তার মধ্যে কোনো অহমিকাবোধ কখনো ছিল না। 

১৫ আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার নির্মম ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার মা জীবন ভিক্ষা চাননি। তিনি নিজে বাঁচতে চাননি। তিনি সাহসের সঙ্গে সেখানে এ কথাই বলেছিলেন- ‘আমার স্বামীকে হত্যা করেছ, আমি তাঁর কাছেই যাব।’ 

তিনি বলেন, আমার মা আমার বাবার একজন উপযুক্ত সাথী হিসেবেই চলে গেছেন। আব্বার যে আদর্শ, সেই আদর্শটা তিনি খুব সঠিকভাবে ধারণ করেছিলেন। আর সেটা ধারণ করেই তিনি নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন। 

বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, সবচেয়ে বড় কথা, রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন সময় যখন একটা কঠিন সিদ্ধান্তের বিষয়- সেখানে আমি দেখেছি, আমাকে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমাদের অনেক বড় বড় অভিজ্ঞ নেতারাও যেখানে সঠিক সিদ্ধান্তটা নিতে পারেননি হয়তো বা একটা ভুল সিদ্ধান্ত দিতে গেছেন, সেখানে আমার মা ঠিক সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বঙ্গমাতার জন্মদিন। সেই জন্মের পর তিন বছর থেকেই পিতা-মাতা সব হারিয়ে সারাটা জীবন শুধু সংগ্রামই করে গেছেন। কষ্টই করে গেছেন। কিন্তু এই দেশের স্বাধীনতা, এই স্বাধীনতার জন্য তিনি যে কত দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন সেটা আমরা জানি। এই দেশ স্বাধীন হবে, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি আসবে, বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকবে।

সংসার সামলে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকে তাঁর সহধর্মিণী সহযোগিতা করতেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি কাজে আমার মাকেও দেখেছি বাবার পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। কখনো সংসারের কোনো সমস্যা নিয়ে বিরক্ত করেননি বা বলেনওনি। বরং বেশির ভাগ সময়ই তো আমার বাবা কারাগারে ছিলেন। একটানা দুই বছরও তিনি কারাগারের বাইরে থাকেননি। কিন্তু আমার মা যখন কারাগারে দেখা করতে যেতেন তখন মা নিজেই বলতেন চিন্তার কিছু নেই। সবকিছু তিনি নিজেই দেখতেন। তিনি বলেন, আমাদের মানুষ করার দায়িত্ব আমার মায়ের হাতেই ছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ প্রতিটি সংগঠনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। নির্দেশনা দেওয়া বা বাইরের অবস্থা জেলখানায় থাকা আব্বাকে জানানো, বাবার নির্দেশনা নিয়ে এসে সেগুলো পৌঁছে দেওয়া। এই কাজগুলো তিনি খুব দক্ষতার সঙ্গে করতেন।