• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

শ্রীলঙ্কার কাছে হোয়াইটওয়াশ টাইগাররা

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০১৯  

বিশ্বকাপের ব্যর্থতা যেন পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের গ্লানি ভুলতে দরকার ছিল কয়েকটি জয়। সুযোগও দ্রুতই আসে টাইগারদের। কিন্তু জয় দিয়ে গ্লানি মোছার আগে আরো হতাশায় নিমজ্জিত হলো টাইগার শিবির। শ্রীলঙ্কার কাছে শেষ ম্যাচও হেরে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগাররা।

মাশরাফী, সাকিব বিহীন দলকে অসহায় আত্মসমর্পনই করতে হয়েছে তামিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে। তিন ম্যাচের কোনটাতেই করতে পারেনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তাই ফলাফলও ছিল প্রায় একই, প্রতি ম্যাচেই বড় ব্যবধানে পরাজয়।

একই ভেন্যু, একই প্রতিপক্ষ। ফলাফলও হল এক। প্রথম ম্যাচ থেকে শেষ ম্যাচে একই চেহারা। অসহায় আত্মসমর্পণে শুরুর পর চরম অসহায়ত্বে শেষ। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও হার। আর তৃতীয় ম্যাচে হতাশার গভীরতা বাড়িয়ে সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে ১২২ রানে হেরে তিন ম্যাচের সিরিজে জয়হীনই থাকল তামিম ইকবালের দল।

বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ আগেও হয়েছে। তবে এবারেরটা বেশি দৃষ্টিকটু এই কারণে যে, এর আগে নিজেদের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে তলানির কোনো দলের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়নি তারা। আইসিসির বর্তমান র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ আছে সাত নম্বরে, আর শ্রীলঙ্কা আটে।

এই সিরিজে দুদলের পার্থক্য কতটা তা ম্যাচের ফলাফল দেখলেই বোঝা যায়। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ পরে ব্যাট করে হারে ৯১ রানে, আট ওভারের বেশি বাকি থাকতে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে লঙ্কানরা ম্যাচ জিতে নেয় পাঁচ ওভারের বেশি বাকি থাকতে ৭ উইকেটে। শেষ ম্যাচে হারটা ১৪ ওভার বাকি থাকতে। এই পরিসংখ্যানের বাইরে দুদলের মানসিক আত্মবিশ্বাসের কথা তো না বললেও চলে।

তিনটি ম্যাচের কোনোটাতেই দল হিসেবে খেলতে পারল না বাংলাদেশ। সেটা না বোলিংয়ে, না ব্যাটিংয়ে। বোলিংয়ে মোস্তাফিজ প্রথম দুই ম্যাচে উইকেট নিলেও শুরু আর শেষ একইভাবে করতে পারেননি। যার প্রভাব পড়েছে স্কোরবোর্ডে। শফিউল সিরিজের সর্বাধিক উইকেট শিকারি হলেও খুব বেশি পরিমাণে বেহিসেবি বোলিং করেছেন। রুবেলও পুরো অচেনা ছন্দে।

পেসারদের দুর্দশার সঙ্গে বাড়তি হিসেবে যুক্ত হন স্পিনাররা। দলের বোলিংয়ের মূল শক্তি সেই বিশ্বকাপ থেকেই যেন ‘নিখোঁজ’ (সাকিব বাদে)।

বোলারদের চেয়ে কম দায় নেই ব্যাটসম্যানদেরও। কোনো ম্যাচেই একাধিক ব্যাটসম্যান দলের হাল ধরতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে মুশফিকুর রহিমকে শুধু একটু সঙ্গ দিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে একাই টানেন মুশফিক। তৃতীয় ম্যাচে মুশির চেয়ারে যেন সৌম্য সরকার।

ক্রিজে একা দাঁড়িয়ে থাকলেন সৌম্য, অন্যরা থাকলেন যাওয়া-আসার মধ্যে। যার কারণে ম্যাচ জেতা তো দূরের কথা, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একবারের জন্যে ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ছায়াও ফেলতে পারল না বাংলাদেশ।

সৌম্য ৮৭ রান করলেও তার অনেক আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। তামিম ইকবালকে (২) দিয়ে শুরু। একে সাজঘরে ফিরে যান এনামুল হক বিজয় (১৪), মুশফিকুর রহিম (১০), মোহাম্মদ মিঠুন (৪), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৯), সাব্বির রহমান (৭), মেহেদী হাসান মিরাজ (৮)।

নিজের এগারো নম্বর ফিফটি তোলা সৌম্য ফিরতেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। ম্যাচের বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পথে ২৮ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম। ২৯৫ রানের টার্গেটে বাংলাদেশ শেষ ১৭২ রানে।

আগেই সিরিজ জেতায় এই ম্যাচে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। তাতে তারা প্রায় শতভাগ সফল। আর সফলতার সবচেয়ে উজ্জ্বল মুখ সানাকা। ব্যাট হাতে ১৪ বলে ৩০ রানের ক্যামিও ইনিংসের পর বল হাতে তিন উইকেট। উইকেট পেয়েছেন যাচাই করা অন্য দুই বোলার কুমারা (২) ও রাজিথাও (২)।

এই সিরিজ যেন শ্রীলঙ্কার জন্য সবকিছু পাওয়ার সিরিজ। বিশ্বকাপের হতাশা কাটাতে প্রথম দরকার ছিল সিরিজ জয়। সেটা এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সেরে ফেলে তারা।

আর তৃতীয় ম্যাচটা তারা জিততে চেয়েছিল লাসিথ মালিঙ্গার কয়েকদিন আগে অবসরে যাওয়া আরেক পেসার কুলাসেকারার জন্য। সবই একেবারে খাপেরখাপ মিলে গেল। কুলাসেকারারকে উৎসর্গ করা ম্যাচ এবং সিরিজটা অবশ্য বাংলাদেশের জন্য হয়ে থাকল অনেক আশঙ্কার উপসর্গ।